২৬ টাকা দরে ধান কিনবে সরকার

প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরকার এবারও চালের পাশাপাশি ধান কিনবে। আগে বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ করা হলেও আমন মৌসুমে শুধু চাল সংগ্রহ করতো সরকার। গত বছর থেকে চালের পাশাপাশি ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। এবারও তা করা হবে।
অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে এবার ২৬ টাকা কেজি দরে দুই লাখ মেট্রিক টন ধান কিনবে সরকার। গত বছরও এই দামে ধান কেনা হয়েছিল, তবে সেবার কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল অনেক বেশি, ছয় লাখ মেট্রিক টন।
সরকার বলছে, গুদামে পর্যান্ত ধানের মজুদ থাকায় এবার কেনার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবার সিদ্ধ চাল কেনা হবে ৩৭ টাকা কেজি দরে, ছয় লাখ মেট্রিক টন। এছাড়া ৩৬ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকটি অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।
বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামী ৭ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ সংগ্রহ অভিযান চলবে।
এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে মজুদ আছে।
আমন চাষের মৌসুম শেষ হয়েছে। তবে এখনও নতুন ধান বাজারে উঠতে শুরু করেনি। নওগাঁ চালকল মালিক সমতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আমনের চাল বাজারে উঠবে।
তিনি বলেন, ধানের দাম ২৯ টাকা ও নতুন চালের দাম ৪৫ টাকা ধরা হলে চালকল মালিক ও কৃষকদের জন্য ভালো হতো। এর বাইরে যদি বাজারে ঘাটতি থাকে, সেক্ষেত্রে দামের তারতম্য হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর সরকারের কাছে চাল বিক্রি করি। তবে ধানের উৎপাদনের উপর চালের দাম নির্ধারিত হবে।’
এবার বোরো মৌসুমে করোনা দুর্যোগের সময় সরকার সংগ্রহ অভিযানে ঠিকমতো সাড়া পায়নি। বাজারে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মিল মালিকেরা।
চলতি বছর বোরো মৌসুমে সরকারের ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ১৯ লাখ টন। ৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজিতে দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর প্রভাবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরু, মাঝারি ও মোটা- সব চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেড়ে যায়।
মিল মালিকেরা বলছেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চালের দাম বেড়েছে। তাই খরচ বেশি হওয়ায় সরকারকে চুক্তি অনুযায়ী চাল দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিল মালিকদের কারণে চালের দাম বেড়েছে। এখন মিলগুলোতে ধান ও চালের পর্যাপ্ত মজুদ আছে।
এদিকে মিলগুলো চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে চাল সরবরাহ না করায় মজুদ বাড়াতে আমদানির পরিকল্পনা করছে সরকার। পাশাপাশি সংকটের এ সময়ে খোলাবাজারে চাল বিক্রি অব্যাহত রয়েছে।